Posts

লাল ইটের দেশে...

Image
 ম্যাজিকের   শহর ঢাকায় এবার গেছিলাম আমরা ৪ জন দিকভ্রান্ত যুবক, যাদের প্রধানতম উদ্দেশ্য ছিল খুবি কম খরচে কিভাবে এ কদিনের ট্যুর সম্পন্ন করা যায়। আর সবার কথা আমি জানি না, আমার মনে অনেকদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল একটাই, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়টা একটু ঘুরে দেখবার, না জানি আরেকটু বড় বা বুড়ো হয়ে গেলে আর আসা হয় কিনা। এই লেখাটায় আমি পুরো ট্যুর নিয়ে তেমন কিছুই বলব না, শুধু বলব জাহাঙ্গিরনগর নিয়েই। দিনক্ষণ ৩১-০৫-১৮। মেগা সিটি ঢাকা থেকেই ওদিন বের হতে আমাদের সময় লেগেছিল মাত্র ৪ ঘন্টা! তবে ভাগ্য ভাল, সূর্যদেবী আমাদের উপর নাখোশ না হয়ে সেদিন বেশ ঠান্ডাই ছিলেন। সব কিছুই ভালোই চলছিল, গাবতলীর পর বাস খুব জোরেই টানছিল, বিপত্তি ঘটল সাভারের কিছু পরে, আচ্ছা, সে না হয় পরের কোনো লেখায় বলব, নতুবা আমাকে নিয়ে আপনার খুব বাজে ধারণা হবে বোধ করি! 😜😜 বেলা ৪টা ৩০ কি ৫ টায় পৌছালাম জাহাঙ্গীরনগরে। ঢূকতেই সেই অনেকদিন আগের, অথচ খুব চেনা সেই রাস্তা, অনেককাল আগে যারে দেখে বলা যায়, প্রথম দর্শনেই প্রেম হয়ে গিয়েছিল, শেষ বিকেলে সেদিন যেন আরো মাদকতা বাড়িয়ে দিয়েছিল। স্থান গাড়লাম আগের সেই হলটাতেই, শহীদ সালাম বরকত হল, খা...

আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ঃ একজন বাঙালি রসায়নবিদ ও বিপ্লবী

Image
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পি.সি. রায় নামেও অধিক পরিচিত)     র সায়নবিদ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়!  ছোটবেলা থেকে  ডাল্টন, রাদারফোর্ড , বোর,  অ্যাভোগেড্রোর নাম শুনে আসা আমরা কজন জানি বিখ্যাত এই বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম? ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাটুলি গ্রামে জন্ম নেন মহান এই বাঙালি বিজ্ঞানী।   তিনি মা ভূবনমোহিনী দেবী এবং পিতা হরিশচন্দ্র রায়ের পুত্র। হরিশচন্দ্র রায় স্থানীয় জমিদার ছিলেন। পড়াশুনা শুরু করেন নিজের গ্রামে নিজের বাবার প্রতিষ্ঠা করা  এম.ই  স্কুলে। জমিদার বংশের সন্তান হলেও অত্যন্ত সাধাসিধে জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। ছোটবেলায় তার অন্যতম শখ ছিল স্কুল পালিয়ে পাতাঘেরা গাছের মগডালে বসে থাকা! ১৮৭২ সালে পড়াশুনার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান কলকাতা হেয়ার স্কুলে। কিন্তু হঠাত করেই অবনতি ঘটে শারীরিক অবস্থার। রক্ত আমাশয়ের কবলে পড়ে ২ বছর ভুগেন তিনি। তবে এই রোগ অন্য আরেক দিক দিয়ে তার জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনে। এই ২ বছর নিয়ে প্রফুল্ল চন্দ্র তার ব্যাক্তিগত ডায়রীতে লিখেন,           “ স্কুলে...

স্মৃতিচারণ

Image
ত খন বয়স ১৮ হবে।সালটা ২০১০ এর শেষের দিকে। এইচ এস সি ফার্স্ট ইয়ার। কিশোর রক্তে তখন মিউজিসিয়ান হবার প্রবল আকাঙ্খা। বাবার পকেট থেকে প্রতি রবিবার রাতে ১০০ টাকার একটা নোট চুরি করা আর পর দিন স্টেডিয়াম মার্কেট গিয়ে বাংলা লিজেন্ড সব আর্টিস্টদের অ্যালবাম কেনা নেশা ছিল প্রায়। বাবা সবই জানত কিন্তু বুঝতে দিতনা। মা, বাবার অমতেই গিটারটা কিনে দিল ২০১০ এ।  আমার খালাত ভাই ফজলে রাব্বি। আহসানুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সে সময়ের বিদায়ী ব্যাচ সিভিলের। হুট করে ফোন। কাল জেমস আসবে। চলে আয়। মিরপুরের বাসায় তখন আমি মা আর বাবার ছোট সংসার। স্কুল কলেজ মিরপুরে হওয়ায় একি বাসায় থাকা ১৫ বছর।মিরপুর এর দিকটায় সব চিনি কিন্তু গুলশানের দিকে কিছু একটা তেমন চিনতাম না।কিন্তু ভেতরে কেমন জানি করে উঠলো। জেমস..... সারা রাত বিন্দুমাত্র ঘুম হলো না।  দিনটা ছিল শুক্রবার। মিরপুর থেকে বাসে ফার্মগেট তারপর রিকশা, ভাইয়া বলে দিল।ঠিক সেরকমই করলাম। যখন তেঁজগাও ঢুকলাম তখন ৩.০০ টা। সে এক আজব দৃশ্য। রাস্তাটা কোথায় যেন হারিয়ে গেল নিমিষেই।প্রকান্ড বড় বড় শত শত ট্রাক।বেগুন বাড়ি হয়ে সোজা অস্ট। ভিতরটা একটু কেঁপে উঠল।সত্যি অসাধারন..!!আর্কিটে...

নিবিড়ের গল্প (পর্ব- ৫ )

Image
আগের পর্ব - নিবিড়ের গল্প (পর্ব চার ) ঝি ম ঝিম বৃষ্টির শব্দ । আজ সকাল থেকেই খুব বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টি পড়লে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমাতে অনেক মজা । নিবিড় অন্যান্য সময় ফ্যান ছেড়ে দিয়ে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমায় । বৃষ্টির এই একটা দিকই তার ভাল লাগে ।অবশ্য বৃষ্টি তার খুব বেশী পছন্দ না । কারন একটাই এলাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি উঠে যায়। রাস্তা ঘাটের পানি নর্দমার ময়লা পানিতে মিশে একাকার হয়ে যায়।যাতায়াতে খুব সমস্যা হয় আর রিকশাভাড়াও আকাশ্চুম্বী হয়ে যায়। বৃষ্টিকে অপছন্দ করার আরোও একটা কারন আছে তার। স্কুলের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল সে। বর্ষাকাল। সকালবেলা মাছ ধরার জন্য তার ছোটচাচার সাথে জাল নিয়ে বের হল । বন্যার সময় পুকুরের মাছ পুকুর থেকে চলে যায় ।আশেপাশের ধান ক্ষেতেই ছোট ছোট মাছ পাওয়া যায়। নিবিড় এর হাতে একটা বিশাল পাতিল ।ছোটচাচার হাতে জাল। মাছ ধরতে ধরতে তারা পুকুরের পাশে এসে পড়ল। দুটো পুকুর পাশাপাশি, মাঝখানে একটা রাস্তা। নিবিড় ঐখানে আগে কখনো আসেনি। একটা জায়গায় এসে নিবিড়ের মনে হল যে তার পায়ের নিচে মাটি নেই । ছোট চাচা দেখে নিবিড় হাবুডুবু খাচ্ছে। জাল ফেলে দিয়ে ভাইপোকে বাঁচাতে লা...

পরম্পরা (শেষ পর্ব)

Image
*আগের পর্ব- পরম্পরা(পর্ব- ৩) শেষ পর্ব............ অভি এখন খুবই ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতিদিন একটা রোগ নিয়ে আস্তে আস্তে সে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে। রোগটার নাম   “ Legionnaires' disease ” .  কিছু কিছু বিষয় সে ইতোমধ্যেই জেনে গেছে। রোগের মূল লক্ষণ কাশি ছাড়া আর তেমন কিছু নয়। পুরো পৃথিবীতে এই রোগের সংখ্যা মোটে ১০ শতাংশ। আর এই ১০ শতাংশের মধ্যে একজন অন্তরাদিদি আর অন্য আরেকজন মিতার ছেলে। রোগটা মূলত পানিবাহিত।    Legionella   নামক ব্যাকটেরিয়ায় এই রোগ ছড়ায়। রোগটি তেমন জটিল কোন রোগ নয় ,  তবে চিকিৎসায় দেরী হলে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে ফুসফুসে। পরে যা থেকে হয় ক্যানসার। অন্তরাদিদির পরিণতিও কি হয়েছিল অভি তা বুঝতে পারে। অযত্ন অবহেলায় দিনের পর দিন এই রোগ বাসা বেঁধেছিল দিদির শরীরে। পাশ করার পরের বছরই অভি গ্রামে পাড়ি জমায়। গ্রামবাসীদের সহায়তায় সে গ্রামেই একটা ক্লিনিক দেয়। দিন ভালোই যাচ্ছিল তার। পুরোনো গ্রামে ফিরে এসে সে যেন আবার নিজেকে ফিরে পেয়েছিল। তারপর একদিন ক্লিনিকে অভি দেখা পায় মিতার। মিতা সেদিন এসেছিল তার স্বামী আর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে। ছেলেট...

আমি আর শহর

Image
সব শুরুর যেমন শেষ থাকে , আবার শেষের পরেই থাকে শুরুর আগমনী বার্তা। কিন্তু কিছু বিষয় অথবা অস্তিত্বের , সময় কিংবা অনুভুতির কোন শেষ বা শেষের শুরু কিছুই থাকে না।এরা বহমান এবং চিরহরিৎ। এই নগরীর বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা প্রতিনিয়ত আমাকে তোমাকে অর্থাৎ আমাদের বেশ বিড়ম্বনায় ফেলে দেয়। মেট্রো বাসের ডিজেলে পোড়া শহরের প্রিয় মুখ প্রতিনিয়ত হারমানে নাগরিক হাসফাসের কাছে।দিনমজুরের ঠিকরে পরা আর্তনাদ নিমিষে হারিয়ে যায় যান্ত্রিক কেকফোনি ও হাওয়ার মাঝে। এখন নগরীরর ঝুম বৃষ্টিধারা তোমাদের কাছে শুধুই জন দুর্ভোগের শিরোনাম । শাহাবাগ রোডের ফুটপাত ঘেঁষে জমে থাকা টকটকে অর্কিড অথবা শুভ্র জিপসি কিংবা ছবির হাটের দেয়ালে দেয়ালে গড়ে ওঠা জীবন্ত আন্দোলন কিছুই কি আর আন্দোলিত করে না তোমাদের। কি ভাবেই বা করবে...!!!! যারা বাউলের গানকে উপহাস করে , যারা বাউলের ঘর ভেঙ্গে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না , তার কাছে এই আমি কি বা আশা করতে পারি। শুধু আফসোস হয় , আমি প্রতিনিয়ত হারাচ্ছি আমার শাহাবাগকে , রাত নামলে ছবির হাটে জমে ওঠা শহুরে কবি , বাউল , বিবাগী , সর্বহারা বেশ্যা , দিনমজুর , যুবক যু...

Death Conspiracy of Princess Diana.

Image
PRINCESS DIANA নাম টি শুনলেই চোখের সামনে কি ভাসে ? একজন দুর্দান্ত , স্মার্ট , ক্লাসিক উইমেন এর ছবি ? যার রুপের আভিজাত্য সবাইকে মোহিত করে রাখত । ঠিক একই সময়ে চোখের সামনে সেই ‘ কুৎসিত ’ কার এক্সিডেন্ট এর স্মৃতি নিশ্চয়ই ভেসে বেড়াচ্ছে ! আজ ও সেই এক্সিডেন্ট নিয়ে সন্দেহের মাত্রা বিন্দুমাত্র কমেনি । এটা কি নিছকই দুর্ঘটনা ছিল ? নাকি কোন মাস্টার প্ল্যানিং ? আসুন , ফিরে যাই ইতিহাসে । Death Conspiracy of Princess Diana                                                ১৯৬১ সালের পহেলা জুলাই ইউনাইটেড কিংডম এর সান্ড্রিংহাম এ জন্মগ্রহণ করেন ডায়ানা স্পেন্সার। ১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই ওয়েলস এর প্রিন্স চার্লস এর সাথে বিবাহে আবদ্ধ হন প্রিন্সেস ডায়ানা। তাদের   বিবাহকে ‘ ওয়েডিং অফ দা সেঞ্চুরি ’ বলে আখ্যায়িত করেন অনেকেই। আস্তে আস্তে মিডিয়াতে ডায়ানার প্রভাব তৈরি হতে থাকে। অনেক চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান এর হয়ে কাজ করতেন ডায়ানা। কিন্তু সমগ্র বিশ্ব কে অবাক করে দিয়ে দুই সন্তান (প্...