Posts

Showing posts from 2017

আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ঃ একজন বাঙালি রসায়নবিদ ও বিপ্লবী

Image
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পি.সি. রায় নামেও অধিক পরিচিত)     র সায়নবিদ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়!  ছোটবেলা থেকে  ডাল্টন, রাদারফোর্ড , বোর,  অ্যাভোগেড্রোর নাম শুনে আসা আমরা কজন জানি বিখ্যাত এই বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম? ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাটুলি গ্রামে জন্ম নেন মহান এই বাঙালি বিজ্ঞানী।   তিনি মা ভূবনমোহিনী দেবী এবং পিতা হরিশচন্দ্র রায়ের পুত্র। হরিশচন্দ্র রায় স্থানীয় জমিদার ছিলেন। পড়াশুনা শুরু করেন নিজের গ্রামে নিজের বাবার প্রতিষ্ঠা করা  এম.ই  স্কুলে। জমিদার বংশের সন্তান হলেও অত্যন্ত সাধাসিধে জীবনের অধিকারী ছিলেন তিনি। ছোটবেলায় তার অন্যতম শখ ছিল স্কুল পালিয়ে পাতাঘেরা গাছের মগডালে বসে থাকা! ১৮৭২ সালে পড়াশুনার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান কলকাতা হেয়ার স্কুলে। কিন্তু হঠাত করেই অবনতি ঘটে শারীরিক অবস্থার। রক্ত আমাশয়ের কবলে পড়ে ২ বছর ভুগেন তিনি। তবে এই রোগ অন্য আরেক দিক দিয়ে তার জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনে। এই ২ বছর নিয়ে প্রফুল্ল চন্দ্র তার ব্যাক্তিগত ডায়রীতে লিখেন,           “ স্কুলে...

স্মৃতিচারণ

Image
ত খন বয়স ১৮ হবে।সালটা ২০১০ এর শেষের দিকে। এইচ এস সি ফার্স্ট ইয়ার। কিশোর রক্তে তখন মিউজিসিয়ান হবার প্রবল আকাঙ্খা। বাবার পকেট থেকে প্রতি রবিবার রাতে ১০০ টাকার একটা নোট চুরি করা আর পর দিন স্টেডিয়াম মার্কেট গিয়ে বাংলা লিজেন্ড সব আর্টিস্টদের অ্যালবাম কেনা নেশা ছিল প্রায়। বাবা সবই জানত কিন্তু বুঝতে দিতনা। মা, বাবার অমতেই গিটারটা কিনে দিল ২০১০ এ।  আমার খালাত ভাই ফজলে রাব্বি। আহসানুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সে সময়ের বিদায়ী ব্যাচ সিভিলের। হুট করে ফোন। কাল জেমস আসবে। চলে আয়। মিরপুরের বাসায় তখন আমি মা আর বাবার ছোট সংসার। স্কুল কলেজ মিরপুরে হওয়ায় একি বাসায় থাকা ১৫ বছর।মিরপুর এর দিকটায় সব চিনি কিন্তু গুলশানের দিকে কিছু একটা তেমন চিনতাম না।কিন্তু ভেতরে কেমন জানি করে উঠলো। জেমস..... সারা রাত বিন্দুমাত্র ঘুম হলো না।  দিনটা ছিল শুক্রবার। মিরপুর থেকে বাসে ফার্মগেট তারপর রিকশা, ভাইয়া বলে দিল।ঠিক সেরকমই করলাম। যখন তেঁজগাও ঢুকলাম তখন ৩.০০ টা। সে এক আজব দৃশ্য। রাস্তাটা কোথায় যেন হারিয়ে গেল নিমিষেই।প্রকান্ড বড় বড় শত শত ট্রাক।বেগুন বাড়ি হয়ে সোজা অস্ট। ভিতরটা একটু কেঁপে উঠল।সত্যি অসাধারন..!!আর্কিটে...

নিবিড়ের গল্প (পর্ব- ৫ )

Image
আগের পর্ব - নিবিড়ের গল্প (পর্ব চার ) ঝি ম ঝিম বৃষ্টির শব্দ । আজ সকাল থেকেই খুব বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টি পড়লে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমাতে অনেক মজা । নিবিড় অন্যান্য সময় ফ্যান ছেড়ে দিয়ে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমায় । বৃষ্টির এই একটা দিকই তার ভাল লাগে ।অবশ্য বৃষ্টি তার খুব বেশী পছন্দ না । কারন একটাই এলাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি উঠে যায়। রাস্তা ঘাটের পানি নর্দমার ময়লা পানিতে মিশে একাকার হয়ে যায়।যাতায়াতে খুব সমস্যা হয় আর রিকশাভাড়াও আকাশ্চুম্বী হয়ে যায়। বৃষ্টিকে অপছন্দ করার আরোও একটা কারন আছে তার। স্কুলের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল সে। বর্ষাকাল। সকালবেলা মাছ ধরার জন্য তার ছোটচাচার সাথে জাল নিয়ে বের হল । বন্যার সময় পুকুরের মাছ পুকুর থেকে চলে যায় ।আশেপাশের ধান ক্ষেতেই ছোট ছোট মাছ পাওয়া যায়। নিবিড় এর হাতে একটা বিশাল পাতিল ।ছোটচাচার হাতে জাল। মাছ ধরতে ধরতে তারা পুকুরের পাশে এসে পড়ল। দুটো পুকুর পাশাপাশি, মাঝখানে একটা রাস্তা। নিবিড় ঐখানে আগে কখনো আসেনি। একটা জায়গায় এসে নিবিড়ের মনে হল যে তার পায়ের নিচে মাটি নেই । ছোট চাচা দেখে নিবিড় হাবুডুবু খাচ্ছে। জাল ফেলে দিয়ে ভাইপোকে বাঁচাতে লা...

পরম্পরা (শেষ পর্ব)

Image
*আগের পর্ব- পরম্পরা(পর্ব- ৩) শেষ পর্ব............ অভি এখন খুবই ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতিদিন একটা রোগ নিয়ে আস্তে আস্তে সে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে। রোগটার নাম   “ Legionnaires' disease ” .  কিছু কিছু বিষয় সে ইতোমধ্যেই জেনে গেছে। রোগের মূল লক্ষণ কাশি ছাড়া আর তেমন কিছু নয়। পুরো পৃথিবীতে এই রোগের সংখ্যা মোটে ১০ শতাংশ। আর এই ১০ শতাংশের মধ্যে একজন অন্তরাদিদি আর অন্য আরেকজন মিতার ছেলে। রোগটা মূলত পানিবাহিত।    Legionella   নামক ব্যাকটেরিয়ায় এই রোগ ছড়ায়। রোগটি তেমন জটিল কোন রোগ নয় ,  তবে চিকিৎসায় দেরী হলে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে ফুসফুসে। পরে যা থেকে হয় ক্যানসার। অন্তরাদিদির পরিণতিও কি হয়েছিল অভি তা বুঝতে পারে। অযত্ন অবহেলায় দিনের পর দিন এই রোগ বাসা বেঁধেছিল দিদির শরীরে। পাশ করার পরের বছরই অভি গ্রামে পাড়ি জমায়। গ্রামবাসীদের সহায়তায় সে গ্রামেই একটা ক্লিনিক দেয়। দিন ভালোই যাচ্ছিল তার। পুরোনো গ্রামে ফিরে এসে সে যেন আবার নিজেকে ফিরে পেয়েছিল। তারপর একদিন ক্লিনিকে অভি দেখা পায় মিতার। মিতা সেদিন এসেছিল তার স্বামী আর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে। ছেলেট...

আমি আর শহর

Image
সব শুরুর যেমন শেষ থাকে , আবার শেষের পরেই থাকে শুরুর আগমনী বার্তা। কিন্তু কিছু বিষয় অথবা অস্তিত্বের , সময় কিংবা অনুভুতির কোন শেষ বা শেষের শুরু কিছুই থাকে না।এরা বহমান এবং চিরহরিৎ। এই নগরীর বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা প্রতিনিয়ত আমাকে তোমাকে অর্থাৎ আমাদের বেশ বিড়ম্বনায় ফেলে দেয়। মেট্রো বাসের ডিজেলে পোড়া শহরের প্রিয় মুখ প্রতিনিয়ত হারমানে নাগরিক হাসফাসের কাছে।দিনমজুরের ঠিকরে পরা আর্তনাদ নিমিষে হারিয়ে যায় যান্ত্রিক কেকফোনি ও হাওয়ার মাঝে। এখন নগরীরর ঝুম বৃষ্টিধারা তোমাদের কাছে শুধুই জন দুর্ভোগের শিরোনাম । শাহাবাগ রোডের ফুটপাত ঘেঁষে জমে থাকা টকটকে অর্কিড অথবা শুভ্র জিপসি কিংবা ছবির হাটের দেয়ালে দেয়ালে গড়ে ওঠা জীবন্ত আন্দোলন কিছুই কি আর আন্দোলিত করে না তোমাদের। কি ভাবেই বা করবে...!!!! যারা বাউলের গানকে উপহাস করে , যারা বাউলের ঘর ভেঙ্গে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না , তার কাছে এই আমি কি বা আশা করতে পারি। শুধু আফসোস হয় , আমি প্রতিনিয়ত হারাচ্ছি আমার শাহাবাগকে , রাত নামলে ছবির হাটে জমে ওঠা শহুরে কবি , বাউল , বিবাগী , সর্বহারা বেশ্যা , দিনমজুর , যুবক যু...

Death Conspiracy of Princess Diana.

Image
PRINCESS DIANA নাম টি শুনলেই চোখের সামনে কি ভাসে ? একজন দুর্দান্ত , স্মার্ট , ক্লাসিক উইমেন এর ছবি ? যার রুপের আভিজাত্য সবাইকে মোহিত করে রাখত । ঠিক একই সময়ে চোখের সামনে সেই ‘ কুৎসিত ’ কার এক্সিডেন্ট এর স্মৃতি নিশ্চয়ই ভেসে বেড়াচ্ছে ! আজ ও সেই এক্সিডেন্ট নিয়ে সন্দেহের মাত্রা বিন্দুমাত্র কমেনি । এটা কি নিছকই দুর্ঘটনা ছিল ? নাকি কোন মাস্টার প্ল্যানিং ? আসুন , ফিরে যাই ইতিহাসে । Death Conspiracy of Princess Diana                                                ১৯৬১ সালের পহেলা জুলাই ইউনাইটেড কিংডম এর সান্ড্রিংহাম এ জন্মগ্রহণ করেন ডায়ানা স্পেন্সার। ১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই ওয়েলস এর প্রিন্স চার্লস এর সাথে বিবাহে আবদ্ধ হন প্রিন্সেস ডায়ানা। তাদের   বিবাহকে ‘ ওয়েডিং অফ দা সেঞ্চুরি ’ বলে আখ্যায়িত করেন অনেকেই। আস্তে আস্তে মিডিয়াতে ডায়ানার প্রভাব তৈরি হতে থাকে। অনেক চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান এর হয়ে কাজ করতেন ডায়ানা। কিন্তু সমগ্র বিশ্ব কে অবাক করে দিয়ে দুই সন্তান (প্...

Spring, Summer, Fall, Winter... and Spring : A story of life through the lens

Image
অদ্ভুত এক মুভির গল্প বলব আজ। অদ্ভুত বলছি তার যথেষ্ট কারণ আছে। একটা মুভির মূল হয় একটা গল্প। জীবনের নির্দিষ্ট একটা ঘটনা। কিছু নির্দিষ্ট মানুষের জীবন। আচ্ছা , মানুষের সম্পূর্ণ জীবনের একটা উদাহরণ কি ক্যামেরাতে বন্দি করা সম্ভব ? একাধারে শিশুকাল , তারুণ্য , যৌবন এবং বার্ধক্যের ধারণা কি এক মুভিতেই দেয়া সম্ভব ? আর সম্ভব হলেও বা , তা কি বেশ জটিল হবে ? সব স্তরের মানুষের কাছে কি পৌছাবে ক্যামেরা পেছনের মানুষটার আসল বার্তা ? এবার উত্তর দেই। হ্যাঁ , সবই সম্ভব। সম্ভব করেছেন সাউথ কোরিয়ান ডিরেক্টর , রাইটার এবং অভিনেতা  Kim Ki Duk   তার স্প্রিং , সামার , ফল , উইনটার ...... এন্ড স্প্রিং মুভিতেই। মুভির ইন্ট্রো দেই, মুভির ডিরেক্টর রাইটার এবং অভিনেতা   Kim  K i Duk .   এই জনাব    Kim Ki Duk   সাহেবের পরিচিতি আছে বিশেষ ভাবে , লো বাজেট ফিল্ম মেকার , শর্ট পিরিয়ডেই ফিল্ম মেকিং এবং তাঁর  Idiosyncratic  কাজ   এর জন্য। তাঁর আরো দুটি মুভি   The Isle (2000)   এবং  A ddress unknown (2001)   যা ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভলে যা...

ধূসর ঘাস - অস্পষ্ট উৎসব

Image
১৪ ই এপ্রিল। সকাল ১০ টা। অন্তু ঘুম থেকে উঠে ওয়াশ রুম এর দিকে আগালো।ঘুমটা আসলে ভেঙ্গে গেল বলা চলে কেননা অন্তু যখন বিছানায় যায় তখন সকাল ৭ টা বাজে। রাত ধরে অন্তু সিদ্ধান্ত নেয় ১লা বৈশাখে সে কোথাও যাবে না, অমরের ৩২১ নং রুম ছাড়া। আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। অন্তুর সাথে থাকার দরুন আমিও জগত সংসারের উৎসবের প্রতি দিন দিন আবেগহীন হচ্ছিলাম। আমারো মনে হতে লাগলো এগুলা মুল্যহীন। উৎসবের জন্য কখনো দিনক্ষণ ঠিক করা লাগে না। জীবন মানে উৎসব। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই উৎসব। চোখ খুলে অন্তুর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। পরনে জিন্স এর প্যান্ট, পাঞ্জাবি, হাতঘড়ি আর চোখে তার মা এর কিনে দেয়া সানগ্লাস। এই সান গ্লাস সে কাউকে পরতে দেয় না। - অই উঠ , উঠ বাইরে যাইতে হবে - কই?? - আরে কথা কম বল। রেডি হ। বাইরে যাবো। আমি কথা না বাড়িয়ে গোসল করে শার্ট পড়ার সময় অন্তু বলল - - অই পাঞ্জাবী নাই তোর?পাঞ্জাবী পর। - পাঞ্জাবী কেন? হাতের জলন্ত আধখানা বেনসনটা আমার দিকে বাড়িয়ে বলল - - আজকে মাইয়া দেখব,মাইয়া। এই কথাটার পর আমি অন্তুর মুখে যে হাসিটা দেখলাম এরপর কিছু বুঝতে আর বাকি রইল না।আমরা দুইজন একটা রিকশায় ...