Spring, Summer, Fall, Winter... and Spring : A story of life through the lens
অদ্ভুত এক
মুভির গল্প বলব আজ। অদ্ভুত বলছি তার যথেষ্ট কারণ আছে। একটা মুভির মূল হয় একটা
গল্প। জীবনের নির্দিষ্ট একটা ঘটনা। কিছু নির্দিষ্ট মানুষের জীবন।
আচ্ছা, মানুষের সম্পূর্ণ জীবনের একটা উদাহরণ কি ক্যামেরাতে বন্দি করা
সম্ভব? একাধারে শিশুকাল, তারুণ্য,
যৌবন এবং বার্ধক্যের ধারণা কি এক মুভিতেই দেয়া সম্ভব? আর সম্ভব হলেও বা, তা কি বেশ জটিল হবে?
সব স্তরের
মানুষের কাছে কি পৌছাবে ক্যামেরা পেছনের মানুষটার আসল বার্তা? এবার উত্তর দেই। হ্যাঁ, সবই সম্ভব।
সম্ভব করেছেন সাউথ কোরিয়ান ডিরেক্টর, রাইটার এবং অভিনেতা Kim Ki Duk তার স্প্রিং,সামার,ফল,উইনটার...... এন্ড স্প্রিং মুভিতেই। মুভির ইন্ট্রো দেই,

মুভি
শুরু হয় বসন্ত ঋতু কে দিয়ে। আচ্ছা, মানুষের জীবনের বসন্ত
কেমন হতে পারে? ঠিক যেমন শৈশব। শৈশবে থাকে না কোন লোভ লালসা,
থাকে না কোন আক্ষেপ...বসন্তের মতই সুন্দর জীবন। কিন্তু শৈশবই মূল
সময় মনুষ্যত্বকে মনের এক কোণে ধারণ করতে শুরু করার। মুভির শুরুতেই দেখা যাবে,
ভোর সকালে সন্ন্যাসী প্রার্থনা করছেন। তাঁর এক কামরার ঘরের মধ্যেই
একটা ছোট দরজা, কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার দরজার
পাশের অংশটি
খোলা, দরজা ব্যবহার না করেই, পাশের উন্মুক্ত অংশ দিয়েই ভাল ভাবেই যাওয়া যায়, চোখের
সামনে এমন উন্মুক্ত অংশ থাকলেও, ছোট ছেলেটি তাঁর গুরুকেই
অনুসরণ করে, সে দরজা খুলেই বের হয়
এবং সে কখনোই তাঁর গুরু কে প্রশ্ন করে নি। এটা দিয়ে বোঝানো হয় রীতি আর ঐতিহ্যের
গুরুত্ব। ঠিক যেমন ভাবে আপনার পুর্বপুরুষ এই পথ পাড়ি দিয়েছেন, আপনি তার অবহেলা করতে পারেন না। তাছাড়া আরেকটি ঘটনা দিয়ে শেষ হয় বসন্ত।
ছোট ছেলেটি প্রায়ই খেলতে যাওয়ার জন্য নৌকা পার হয়ে ওপারে যায়। জীব জন্তু ছাড়া মূলত
তার খেলার কোন সাথী নেই। তার খেলার নিয়ম টি ছিল অদ্ভুত। সে মাছ ব্যাঙ সাপ এদের
গলায় পাথর বেঁধে দিত, আর পাথরের ভর এড়িয়ে এদের বেঁচে থাকার
লড়াই দেখে হাসতে থাকত। তার এই খেলা দেখতে পায় তার গুরু, পরদিন
ভোরে ছেলেটি নিজের পিঠে আবিষ্কার করে এক বিশাল পাথর। তার গুরু তাকে বলেন, এই পাথর বাঁধা থাকা অবস্থাতেই তুমি সেই সব প্রাণীদের খুজে তাদের মুক্ত
করবে, এবং তখনই তোমার পিঠের বোঝা কমবে, কিন্তু যদি কোন প্রাণী মারা যায়, তবে তোমার মনের
বোঝা কখনোই কমাতে পারবে না যা এই পাথরের বোঝার কাছে কিছুই না। এই অংশে আসে,
কর্ম। কর্ম মানুষকে সারাটা জীবন তাড়া করে। তার নিজের কর্মের ফল ই
তাকে ভোগ করতে হয়। হয় শারীরিক দিক দিয়ে অথবা মানসিক দিক দিয়ে। আর বিবেকের তাড়না যে
কি ভয়ঙ্গকর হতে পারে তার ই ইঙ্গিত দেওয়া হয় শেষের ঘটনায়। এভাবে শেষ হয় বসন্ত।
আসে গ্রীষ্ম।
প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই থাকে চাহিদা। চাহিদা মানুষকে কত নিচে নামিয়ে ফেলতে পারে
তাই দেখানো হয় এই সময় টায়। এই সময় টি হল তারুণ্য ।। কোমল মনে চাহিদা বসবাস শুরু
করে। নিয়ম ভাঙ্গার প্রবল
ইচ্ছা জাগতে
শুরু করে। জাগতে থাকে ভালবাসা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ... শারীরিক চাহিদা, মানসিক চাহিদা... এবং মুভির এই অংশে, সন্ন্যাসীর
কাছে আসেন একজন মা, তার অসুস্থ কন্যা কে নিয়ে। প্রথম কোন
নারীর সংস্পর্শে আসে ছেলেটি।
এর পর আসে
যৌবন, আসে বার্ধক্য...
খুব ছোট ছোট
ঘটনা দিয়ে, মানুষের সম্পুর্ন জীবন বর্ণনা
হয়ে গেল। না আছে কঠিন কোন ডায়লগ, বা বেশ জমকালো লোকেশন বা
ওয়েল পেইড অভিনেতা অভিনেত্রী। তারপরও সেরা ছবির জায়গা দখল করতে বেশী সময় লাগেই নি।
প্রত্যেকটা ঋতুর দৃশ্যায়ন করা হয়েছে নিখুদ ভাবেই। এত সুন্দর সহজ মুভি পাওয়া আসলেই
কঠিন। মুভি এমন ই যে মুভি কে নিয়ে লিখতে বাধ্য করে অনেক টা।
আশা করি সবার
ভাল লাগবে :)
Comments
Post a Comment