ধূসর ঘাস
অন্তু। সময় সন্ধ্যা সাতটা বারো । একুশে হলের ৩০৮ পশ্চিম । রুমের দরজায় কিঞ্চিত আওয়াজ । রুম থেকে বের হলেন অন্তু । মুখে কিছুটা চিন্তার ভাজ। দরজায় তালা দিবেন কি দিবেন না?? হুট করে ঠিক করলেন তালা দেওয়া দরকার কি??
আমি তো একটা সিগারেট কিনতেই যাচ্ছি । পাঁচ মিনিটের পথ।
সুতরাং আর কোনো চিন্তা না করেই রুম থেকে বের হয়ে গেলেন সিগারেটের জন্য । তাকে সিগারেট কিনতে যেতে হবে হানিফ ভাইয়ের দোকানে ।সে এককালে দুলালের দোকান থেকে সিগারেট কিনত। কিন্তু গুনে গুনে ১৩৩৭ টাকা বাকি করার পর সে দুলালের কাছ থেকে আর সিগারেট না নিয়ে পাশের হানিফ ভাইয়ের দোকান থকে সিগারেট নেয়। প্রতিবারই সে সিগারেট কেনার সময় দুলাল ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে......
“কেমন আছো ভাই ?”
অন্তু সবসময়ই বলে বেড়ায় এই বকেয়া সে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার আগেই পরিশোধ করে যাবে । কিন্তু আমার মনে হয় একথাটা বলার সাথে সাথেই সে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে – “ সম্ভব তো??”।এই আশংকাটা তার বকেয়া পরিশোধ করা নিয়ে নয় ।
সিগারেট টানতে টানতে দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় অন্তুর সাথে দেখা হয় সামিনের। অশালীন ভাবে অন্তুকে সম্বোধন করে সামিন জানতে চায় – “ যাবি??”
অন্তু বলে – “কই?”
৩২১ ।
অন্তু হেসে বলে – “চল যাই।”
সিগারেটটা সামিনের হাতে দিয়ে ৩২১ নং রুমের দিকে এগুতে থাকল দুজন।সামিন পুরকৌশল বিভাগে পড়ে। লোকমুখে শোনা যায় সে নাকি মেট্রিক ও ইন্টারে একই সাথে গোল্ডেন ও বৃত্তি পেয়েছিল,কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড থেকে । কুমিল্লাকে নিয়ে খুব গর্ব তার । এই বিষয়টা শোনার পর থেকেই তার প্রতি একটা সম্মানবোধ কাজ করত ।
তিন তালায় উঠতেই মাহতাবের চিৎকার – “যাচ্ছো নাকি??”
অন্তু মুচকি হেসে বলল – “হ্যাঁ”
মাহতাব বলল – “ যাও। আসতেছি।"
৩২১ এর কাছাকাছি আসতেই অন্তু দেখল দরজার সামনে অনেকগুলো জুতা । জুতা দেখেই সামিনের দিকে তাকিয়ে এক ভয়ঙ্কর হাসি দিল অন্তু আর বলল – “ ও বাপ!!!!!!”
সামিনের ফিরতি হাসিটা ছিল আরো ভয়ঙ্কর – “ আরে কালকে পহেলা বৈশাখ তো.........বন্ধ রে বোকা ”
রুমে ঢুকার সাথে সাথেই রুমের সবাই একসাথে চিৎকার করে উঠল – “ আরে বদ্দা নাকি!!!!!!!” রুমে ঢুকেই মাহতাব আর সামিন মেঝেতে গিয়ে বসলো আর অন্তু আশ্রয় নিল পশ্চিমের খাটের কোনায় । সেটা দেখে মাহতাব বলল – “ নবাবগিরিটা না চুদিয়ে মেঝেতে এসে বয় "
অনেক ভাল একটা লেখা পেলাম বহুদিন পর
ReplyDeleteগুরু......পর্ব চাই!!!
ReplyDelete