আমি আর শহর



সব শুরুর যেমন শেষ থাকে, আবার শেষের পরেই থাকে শুরুর আগমনী বার্তা। কিন্তু কিছু বিষয় অথবা অস্তিত্বের, সময় কিংবা অনুভুতির কোন শেষ বা শেষের শুরু কিছুই থাকে না।এরা বহমান এবং চিরহরিৎ।

এই নগরীর বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা প্রতিনিয়ত আমাকে তোমাকে অর্থাৎ আমাদের বেশ বিড়ম্বনায় ফেলে দেয়। মেট্রো বাসের ডিজেলে পোড়া শহরের প্রিয় মুখ প্রতিনিয়ত হারমানে নাগরিক হাসফাসের কাছে।দিনমজুরের ঠিকরে পরা আর্তনাদ নিমিষে হারিয়ে যায় যান্ত্রিক কেকফোনি হাওয়ার মাঝে।

এখন নগরীরর ঝুম বৃষ্টিধারা তোমাদের কাছে শুধুই জন দুর্ভোগের শিরোনাম । শাহাবাগ রোডের ফুটপাত ঘেঁষে জমে থাকা টকটকে অর্কিড অথবা শুভ্র জিপসি কিংবা ছবির হাটের দেয়ালে দেয়ালে গড়ে ওঠা জীবন্ত আন্দোলন কিছুই কি আর আন্দোলিত করে না তোমাদের।

কি ভাবেই বা করবে...!!!!
যারা বাউলের গানকে উপহাস করে, যারা বাউলের ঘর ভেঙ্গে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না, তার কাছে এই আমি কি বা আশা করতে পারি।

শুধু আফসোস হয়,
আমি প্রতিনিয়ত হারাচ্ছি আমার শাহাবাগকে, রাত নামলে ছবির হাটে জমে ওঠা শহুরে কবি, বাউল, বিবাগী, সর্বহারা বেশ্যা, দিনমজুর, যুবক যুবতী, প্রেমিক প্রেমিকা, সর্বপ্রকার মানুষের মিলন মেলাকে।

আমি হারাচ্ছি সব একটু একটু করে।।

হে আগামী তোমার জন্য আমার প্রিয় কবি শামসুর রাহমানের কিছু কথা :-
এ শহর বেজায় প্রলাপ বকে, আওড়ায় শ্লোক।
গলা ছেড়ে গান গায়, ক্ষিপ্র কারখানায়
ঝরায় মাথার ঘাম পায়ে।
ভাবে দোলনার কথা কখনো-সখনো
দ্যাখে সরু বারান্দায় নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির রূপ।


এ শহর ক্ষুধাকেই নিঃসঙ্গ বাস্তব জেনে ধূলায় গড়ায়;
এ শহর পল্টনের মাঠে ছোটে, পোস্টারের উল্কি-ছাওয়া মনে
এল গ্রেকো ছবি হয়ে ছোঁয়ে যেন উদার নীলিমা,
এ শহর প্রত্যহ লড়াই লড়ে বহুরূপী নেকড়ের সাথে ।।

Comments

  1. যারা বাউলের গানকে উপহাস করে, যারা বাউলের ঘর ভেঙ্গে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না, তাদের কাছে আমরা কি বা আশা করতে পারি।

    ReplyDelete

Post a Comment