রহস্যে ঘেরা বাল্ট্রা দ্বীপ!

    



       সৃষ্টির শুরু থেকেই প্রকৃতির রহস্যের পিছনে ছুটেছে মানুষ। যুক্তি দিয়ে ভেদ করতে চেয়েছে সব রহস্য। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মানুষের জানার পরিধিও বেড়ে চলল। আজ থেকে ৫০ বা ৬০ বছর আগে আমরা প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে যে রহস্য ভেদ করতে পারতাম না, আজ তা খুব সহজেই জানতে পারছি। কিন্তু, প্রযুক্তির এই স্বর্ণযুগে বিজ্ঞান এখনো কিছু রহস্য সমাধান করতে পারেনি, ফলে মানুষের কাছে তা রয়ে গেছে অজানা।
তেমনি এক রহস্যে ঘেরা দ্বীপ বাল্ট্রার কথা আজ জানাব আপনাদের।

       দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডরের নিকটবর্তী ১০ টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ। এই ১৩ টি দ্বীপের একটি হচ্ছে বাল্ট্রা। অন্য ১২টি দ্বীপ থেকে এটি পুরোপুরি আলাদা, অদ্ভুত, রহস্যময়।

     সময়টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। কৌশল্গত কারণে গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি দ্বীপে এয়ারবেস স্থাপন করে মার্কিন সেনাবাহিনী। এই এয়ারবেসের একজন অফিসার ওয়াগনারই প্রথম ধরতে পারেন এই দ্বীপের রহস্যময়তা। দ্বীপপুঞ্জটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, বাল্ট্রায় এক ফোটা বৃষ্টিও পড়েনা! অথচ বাল্ট্রার ওপাশের দ্বীপে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়।

    এখানে এলেই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে কম্পাসের কাটা। সব সময় উত্তর দিক নির্দেশকারী কম্পাস এখানে এলেই কখনও স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, কখনও বা নিজের ইচ্ছামত ঘুরতে থাকে। দ্বীপের উপর দিয়ে প্লেনে থাকলেও কম্পাস ঠিক একি আচরণ করে। কিন্তু দ্বীপ পার হলেই সব ঠিক!

    এয়ারবেসের সেই অফিসার ওয়াগনার এ দ্বীপের বিচিত্র এক দিক দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি একবার জোর করে কিছু প্রাণিকে বাল্ট্রা ও এর পাশের দ্বীপ সান্তাক্রুজের মাঝামাঝি খালে ছেড়ে দিয়েছিলেন। এরপর তিনি দেখেন, সেগুলো বাল্ট্রাকে এড়িয়ে সান্তাক্রুজের ধার ঘেষে চলে যাচ্ছে। তিনি আরও দেখেন, কোন পাখি দ্বীপে ঢুকতে এলেই ফিরে যাচ্ছে, যেন কোন এক অদৃশ্য শক্তি তাদের ঢুকতে দিচ্ছে না!


     এবার বলব এ দ্বীপের আরেকটি আশ্চর্য দিক নিয়ে। কেউ যদি এ দ্বীপে পা রাখে, সঙ্গে সঙ্গে হালকা হয়ে যায় তার মাথা। অন্য এক জগতে হারিয়ে যাবার অনুভূতি হয় তখন, যা মনকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। বেশিক্ষণ দ্বীপে থাকলে চলে আসার পর বেশ কিছুদিন রয়ে যায় এর রেশ!


      বিচিত্র এ দ্বীপের রহস্য এখনো ধরা সম্ভব হয়নি। এখানে গড়ে উঠেনি কোন মানবসভ্যতা, তাই একে ‘মৃত দ্বীপ’ ও বলা হয়। বিজ্ঞান হয়ত ভবিষ্যতে উন্নতির চরম শিখরে পৌছবে, কিন্তু হয়ত ভেদ করতে পারবে না বাল্ট্রা দ্বীপের রহস্য!


Comments

Popular posts from this blog

মজার খেলা ডার্ট বোর্ড

হাই – লাইন ডিফেন্স ইন ফুটবল

সংখ্যা দিয়ে বন্ধুত্ব!!!