ফুটবল ফরমেশান (৩ -৫ -২) ঃপর্ব - ৪
ফুটবল ফরমেশান নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার আজকের পর্বে থাকছে ৩ – ৫ – ২ ফরমেশান । এই ফরমেশানে বিভিন্ন পজিশনে খেলা প্লেয়ারদের ভূমিকা , ফরমেশানের শক্তিশালী ও দুর্বল দিক সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করব এই পর্বে ।
এই ফরমেশানে দলকে মূলত তিনটি ধাপে সাজানো হয় । রক্ষণভাগে রাখা হয় তিনজন ডিফেন্ডার (একজন সেন্টারব্যাক , একজন লেফটব্যাক ও একজন রাইটব্যাক )। মাঝমাঠের দায়িত্বে থাকে পাঁচজন মিডফিল্ডার ( দুইজন উইংব্যাক , দুইজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার ও একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ) । সর্বশেষ ধাপে থাকে দুইজন ফরোয়ার্ড ।
রক্ষণভাগের প্রধান দায়িত্ব থাকে সেন্টারব্যাকের উপর । এই পজিশনে খেলা প্লেয়ারটির দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে এবং বল ক্লিয়ারেন্স ভালো হতে হবে । তার দুইপাশে থাকবে রাইট ও লেফটব্যাক । এই পজিশনে খেলা প্লেয়ারদের বল কেড়ে নেয়ার ও ট্যাকল করার দক্ষতা থাকতে হবে । এছাড়াও উপরের বলগুলো ক্লিয়ার করার ব্যাপারে তাদের সতর্ক থাকতে হয়।
মাঝমাঠের একেবারে দুইধারে থাকে দুইজন উইংব্যাক । এই দুইটা পজিশনকে বলা চলে এই ফরমেশানের সবথেকে ভাইটাল পজিশন । এই পজিশনে খেলা প্লেয়ারদের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল গতি এবং ফিটনেস । তাদেরকে যেমন ডিফেন্সে সহায়তা করতে হবে তেমনি একইসাথে ভালো ক্রস ও পাসিং এর দক্ষতা থাকতে হবে ।
মাঝমাঠের খেলার প্রধান দায়িত্ব থাকবে দুইজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের উপর । পুরো দলের খেলা কতটা গোছানো তার গুরুভার থাকে তাদের উপর । এদের প্রধান দায়িত্ব উইংব্যাক , অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ও ফরোয়ার্ডদের বলের যোগান দেয়া । পাশাপাশি এদের বল কেড়ে নেয়ারও দক্ষতা থাকতে হয়। এই পজিশনে খেলা প্লেয়াররা রক্ষণভাগ ও আক্রমণভাগের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে । অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার তার সৃজনশীলতা ও বুদ্ধিদীপ্ত মুভমেন্টের মাধ্যমে গোলের সুযোগ তৈরি করে । দুইজন ফরোয়ার্ডের নিজেদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকা খুবই জুরুরি । সেইসাথে তাদের সুযোগসন্ধানী ও ভালো ফিনিশিং দক্ষতা থাকতে হবে।
সুবিধাঃ
কোনো দল যদি কাউন্টার অ্যাটাকে অনেক শক্তিশালী হয় তবে তাদের বিপক্ষে এই পদ্ধতি দারুণ কার্যকর । দুইপাশে দুই উইংব্যাক থাকায় থাকায় তারা কাউন্টার অ্যাটাকের সময় দ্রুত নিচে নেমে ডিফেন্সে সহায়তা করতে পারে । এতে করে অপর তিনজন ডিফেন্সের পক্ষে প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ড ও অ্যাটাকিং মিডকে আটকানো সহজ হয়।
সেন্ট্রাল মিডফিল্ডাররা একটু নিচ থেকে খেলায় তারা ডিফেন্সে ভূমিকা রাখতে পারে । ফলে উইংব্যাকরা আক্রমণে অংশ নিতে পারে । তারা প্রচুর ক্রস ও লং বল ফরোয়ার্ডদের পাঠানোর সুযোগ পায়।
দুই সেন্ট্রাল মিড ও দুই উইংব্যাক থাকায় মাঝমাঠ কমপ্যাক্ট থাকে । ফলে বল হারালেও তা দ্রুত রিকোভার করার সুযোগ থাকে । এছাড়াও বিপক্ষ দল আক্রমণের সময় বল হারালে তা নিয়ে দ্রুত প্রতি-আক্রমণে যাওয়ার সুযোগ থাকে ।
দুই সেন্ট্রালমিডের চতুর্দিকে প্লেয়ার থাকায় তারা সহজেই বল ছাড়তে পারে । ফলে বল পজেশন অনেক বেড়ে যায়।
অসুবিধাঃ
এই ফরমেশানে তিন ডিফেন্স থাকায় তা মাঝেমাঝে খুব বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায় । তিনজন সেন্টারব্যাককে তাদের নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি ফুলব্যাকদের ভূমিকাগুলোও সামলাতে হয়। এতে করে তাদের পক্ষে ম্যান মার্কিং করা যেমন কষ্ট হয় তেমনি জোনাল মার্কিং করাও কষ্ট হয় । এছাড়া সেন্ট্রাল মিডের ভুলে প্রতিপক্ষের স্ট্রাইকাররা খালি জায়গা পেলে তা কাভার করা ডিফেন্সের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে ।
উইংব্যাকদের এই ফরমেশানে গতি ও দমের পাশাপাশি ইন্টারচেপশন এবং পজিশনিং সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা খুব জুরুরি । তা না হলে পুরো ফরমেশানটাই অচল হয়ে পড়বে।
তথ্যসুত্রঃ
https://www.fourfourtwo.com/features/football-tactics-explained-most-common-formations-and-how-beat-them?page=0%2C4#:JVw32SGuijVxvA?thttps://7500toholte.sbnation.com/2015/7/14/8933799/football-tactics-basics-the-3-5-2-formation-explained
এছাড়া এই বিষয়টি জানতে নিচের ভিডিওটি ক্লিক করতে পারেন.........
Comments
Post a Comment