গল্পে গল্পে Googol কিংবা Google!
ধরুন, আপনি আপনার মাথার চুল গুণতে চাচ্ছেন। পারবেন কি? কিংবা, মহাবিশ্বের তারার সংখ্যা গূনতে চাচ্ছেন আপনি। কিংবা গুণতে চাচ্ছেন পৃথিবীতে মোট অণুর সংখ্যা। হুমম, কিছুটা কঠিন হলেও আপনি এগুলো গণ্না করতে পারবেন। যাদের মাথায় কালো চুল আছে, তাদের মাথার চুলসংখ্যা ১ লক্ষ ৮ হাজার থেকে ১০ হাজারের মত, যাদের লাল চুল, তাদের থাকে ৮০ হাজারের মত, আর যাদের সোনালী চুল তাদের আছে ১ লক্ষ ৫০ হাজারের মত। মহাবিশ্বে মোট তারকার সংখ্যারেঞ্জ মোটামুটি 10^22 থেকে 10^24 এর মধ্যে। আর মহাবিশ্বের মোট অণুর সংখ্যাটা হল 1.33 * 10^50 এর মত। অবাক হচ্ছেন? এত বড় বড় সব সংখ্যা কিভাবে গোণা সম্ভব! কিন্তু এর চেয়েও বড় সংখ্যা আছে।
গণিতবিদ এডওয়ার্ড ক্যাজনার , একবার খুবই বড় একটা সংখ্যার নাম খুঁজছিলেন, যার নাম
হবে খুব সহজ আর গালভরা। সংখ্যাটি ছিল Ten duotrigintillion বা 10^100 বা 10000000000000000000000000000000000000000!
তাঁর নয় বছরের ভাগ্নে মিল্টন পাশেই খেলা করছিলেন। এসময় মিল্টনের মুখ থেকে একটা অসংলগ্ন
শব্দ বেরিয়ে আসে, যা বেশ পছন্দ হয়ে যায় ক্যাজনারের। তিনি ওই বিশাল সংখ্যার নাম রেখে
দেন Googol! ধারণা করা হয়, দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সব পারমাণবিক কণা এক করা হলেও তা হবে
1 Googol এর চেয়ে কম!
এদিকে ভাগ্নে মিল্টন তাঁর খেলা থামিয়ে রাখনেনি, তবে তা হল সংখ্যার খেলা। মামা ক্যাজানারকে
অতিক্রম করে তিনি বলেন 1 Googol এর চেয়েও বড় সংখ্যা আছে, তা হল 10^10^100! তিনি এই
সংখ্যার নাম দেন Googolplex.
এই Googol এর সাথে সার্চ ইঞ্জিন Google
এর কি কোন সম্পর্ক আছে? মিশিগানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ল্যারি পেইজ নিজের আবিষ্কৃত
সার্চ ইঞ্জিনের একটি নাম খুঁজছিলেন, যা ক্যাজনারের Googol সংখ্যার মতই তথ্য মানুষের
হাতের মুঠোয় নিয়ে আসবে। বন্ধু শন আন্ডারসনকে তিনি বিষয়টা জানাতেই শন তা নিয়ে আগ্রহী
হন এবং ঘেটে দেখেন এই গুগল নামে কোন ডোমেইন এভেইলএবল আছে কি না। তিনি দেখলেন আসলেই
আছে, ফলে সার্চ ইঞ্জিনটার নাম রাখা হয় ‘Google’ কিন্তু Googol এর জায়গায় Google কেন!
কারণ শন ডোমেইন সার্চ করার সময় বানানটা যে ভুল করে Googol এর জায়গায় Google লিখেছিলেন!!!
এই Google আজ বিশ্বের মানবজাতির প্রধান তথ্যভান্ডার।
এদিকে Googolplex কেও কিন্তু ল্যারিরা ভুলে জাননি। এই নামের সাথে মিল রেখে তারা
তাদের প্রধান কার্যালয়ের নাম রেখে দিয়েছে Googleplex!
ভুল থেকে যদি বড় কিছু হয়, তবে তো বেশি বেশি ভুল করাই ভালো!
Comments
Post a Comment