ফুটবল ফরমেশান ( ৪ - ২ - ৩ -১ )ঃ পর্ব - ৩
ফুটবল  ফরমেশান 
নিয়ে  ধারাবাহিক   আলোচনার  
আজকের  পর্বে   থাকছে  
৪-২–৩–১  ফরমেশান । স্প্যানিশ  ও  জার্মান  লীগগুলোতে 
এই  ফরমেশান   অনেক  
আগে   থেকেই   প্রচলিত 
তবে  ইপিএলেও  বর্তমানে 
সফলতার  সাথে  এই  ফরমেশান  ব্যাবহার 
করা   হচ্ছে । আধুনিক  ফুটবলের 
অন্যতম  জনপ্রিয়  একটা  ফরমেশান  হল  ৪-২-৩-১।
এই  ফরমেশানে 
পুরো  দলকে  মূলত  চারটি  ধাপে  সাজানো  হয় । প্রথম 
ধাপে  থাকে  চারজন  ডিফেন্ডার
( দুইজন  সেন্টারব্যাক  ও  দুইজন  ফুলব্যাক ) , তারপর  দুইজন  মিডফিল্ডার  , তারপর 
তিনজন  ফরোয়ার্ড  ও  একদম  শেষ  ধাপে  থাকে  মেইন  স্ট্রাইকার । 
ডিফেন্ডারদের  মধ্যে  দুই  সেন্টারব্যাকের  প্রধান 
লক্ষ্য  গোল  আটকানো । 
আর  দুই  ফুলব্যাক 
রক্ষণভাগ  সামলে   আক্রমণেও 
ভূমিকা  রাখার  চেষ্টা 
করে । দুইজন  মিডফিল্ডারদের  মধ্যে  একজন  খেলে  ডিফেন্সিভ  মিডফিল্ডার 
হিসেবে  যার  প্রধান 
লক্ষ্য  থাকে  নিজেদের  ডিবক্সের 
বাইরে  প্রতিপক্ষের  আক্রমণকে 
রুখে  দেওয়া । সে  বল  পায়ে  না  রেখে  দ্রুত  বল  সামনে  ছেড়ে  দেয়ার  চেষ্টা  করে । অপর 
মিডফিল্ডারের  প্রধান  কাজ  পাসিং
। ডিফেন্স  ও  অ্যাটাকের 
মধ্যে  বলের  আদান – প্রদানে  সবচেয়ে  বড়  ভূমিকা  
থাকে  তার। উপরের  তিন   ফরোয়ার্ডের  মাঝেরজন 
মূলত  অ্যাটাকিং  মিডফিল্ডার । 
তার  দায়িত্ব  থাকে  বল
নিয়ে  সামনে  আগানো  এবং  দুই  উইঙ্গার  ও  মেইন  স্ট্রাইকারের 
জন্য  গোলের  সুযোগ  করে  দেওয়া । দুই 
উইঙ্গার  তাদের  গতি  ও  স্কিল  ব্যাবহার  করে  প্রতিপক্ষের  রক্ষণ  ভাঙ্গার  চেষ্টা 
করে । একেবারে  উপরের  স্ট্রাইকারের 
কাজ  সুযোগের  উপযুক্ত 
ব্যাবহার  করা । এই  পজিশনে 
খেলা  প্লেয়ারটিকে  সুযোগসন্ধানী 
হতে  হবে । পাশাপাশি  ডিবক্সের 
যেকোনো  কোণ  থেকে  শট  করার  অ্যাবিলিটি  থাকতে  হবে
। 
সুবিধাঃ
যেহেতু  দুইজন  মিডফিল্ডার  ডিফেন্সে  সহায়তা  করে  তাই  প্রয়োজনের  সময়  হাই  ডিফেন্সিভ  লাইন  তৈরি  করা  সম্ভব।আবার  চাইলে  ডিপ  ডিফেন্সও  সম্ভব। 
দুইজন  ফুলব্যাক  আক্রমণে  সহযোগিতা  করায়  উইঙ্গাররা  প্রতিপক্ষের  ডিবক্সে  চেপে  যাওয়ার  সুযোগ  পায় । ফলে  অ্যাটাকিং  মিডফিল্ডার  ও  মেইন  স্ট্রাইকারের  স্কোরিং  এর  সম্ভাবনা  বেড়ে  যায় । 
দুই  ডিফেন্সিভ  মিডফিল্ডারের  পাশাপাশি  দুই  উইঙ্গার  ও  এক  অ্যাটাকিং  মিডফিল্ডার  থাকায় ফ্লাট  পাসের  চাইতে  কোণাকুণি  পাসিং  বেশি  খেলা  সম্ভব  হয় । এতে  করে  প্রতিপক্ষের  খালি  জায়গাগুলো  কাজে  লাগানোর  সুযোগ  থাকে । 
প্রতিপক্ষ  বল  হারালে  তা  কাজে  লাগিয়ে  দ্রুত  কাউন্টার  অ্যাটাকে  যাওয়ার  সুযোগ   থাকে  এই  ফরমেশানে । এই  ফরমেশানের  প্রতি  আক্রমণগুলো  বিপক্ষ  দলের  জন্য  খুবই  ভয়ানক  হতে  পারে । 
ফুলব্যাক , উইঙ্গার , ডিফেন্সিভ  মিডফিল্ডার , অ্যাটাকিং  মিডফিল্ডার  সবারই  আক্রমণে  যাওয়ার  সুযোগ  থাকায়  মেইন  স্ট্রাইকারের  স্কোরিং  এর  সুযোগ  অনেক   বেড়ে  যায় । 
অসুবিধাঃ
যদি  মিডফিল্ডাররা  যথেষ্ট   দ্রুত  না  হয়  তাহলে  মিডফিল্ড  অনেক  শ্লথ  ও  জনবহুল  হয়ে  যায় । এতে  করে  বিপক্ষ  দল  লং  পাসিং এর  মাধ্যমে   আক্রমণের  সুযোগ  পায় । 
মাঝমাঠ  দখল  করতে  না  পারলে  উইঙ্গারদের  কাছে  বল  পাঠানো  সম্ভব  হয়  না ।  তাই   তারা  একটু  নিচে  নেমে  বল  নেয়ার  চেষ্টা  করে  ।  এতে  করে  ৪-২-৩-১  ফরমেশান  ৪-৫-১  ফরমেশানে  পরিণত  হয় । ফলে  মেইন  স্ট্রাইকার  উপরে  প্রায়  বিছিন্ন  হয়ে  যায়। 
উইঙ্গার  দ্রুত  ওঠানামা  না  করতে পারলে  প্রতিপক্ষের  কাউন্টার  অ্যাটাক  সামলানো  কঠিন  হয়ে  পড়ে । 

 
 
Comments
Post a Comment