জন্টি রোডস ,ফিল্ডিং এর কিংবদন্তি
                           জোনাথন নেইল জন্টি রোডস ক্রিকেট এর অন্যতম লিজেন্ড ,ফিল্ডিং
এ যার তুলনীয় এখনও  কাউকে পাওয়া যায়নি।দক্ষিন আফ্রিকার হয়ে
প্রতিনিধিত্ব করা এই ক্রিকেটারের  জন্ম
নাটাল প্রদেশের পিটারমারিৎজবাগে ১৯৬৯ সালের ২৭ জুলাই।মাঠের খেলায় ব্যাটিং
বোলিং এর সাথে ফিল্ডিংও যে সমান গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝিয়েছেন এই মানুষটি।দূর্দান্ত সব
ক্যাচ আর রান আউট করে ক্রিকেট বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন বারবার।
                        ক্যারিয়ারের শুরুতে পিটারমারিতজবার্গের নাটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ক্লাব
ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার, কোয়াজুলু-নাটাল ও নাটালের হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।অনেকেই হয়তো জানেন না তিনি দক্ষিন আফ্রিকার  হকি দলেরও একজন সদস্য ছিলেন।কিন্তু ১৯৯২ সালে
দলকে  অলিম্পিকে তুলতে ব্যর্থ হলে
ক্রিকেটেই মনোনিবেশ করেন ।
| 
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||
| 
বছর | 
দল | |
| 
১৯৮৮-১৯৯২ | 
নাটাল বিশ্ববিদ্যালয় (মারিৎজবার্গ) | |
| 
১৯৮৮-১৯৯৮ | 
নাটাল | |
| 
১৯৯৮-২০০৩ | 
কোয়াজুলু-নাটাল | |
| 
১৯৯৯ | 
আয়ারল্যান্ড | |
| 
২০০৩ | 
গ্লুচেস্টারশায়ার | |
                        ১৯৯২ সালের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপেই দলে ডাক পান এবং
সিডনি গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় তাঁর।প্রথম ম্যাচেই ক্রেগ ম্যাডারমেটকে
রান আউট করে নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন,যদিও অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ১৭০ রানের টার্গেট ১
উইকেটেই পেরিয়ে যাওয়ায় ব্যাটিং নামার সুযোগ পাননি সেই ম্যাচে।ঐ বিশ্বকাপেই নিজের
পঞ্চম ম্যাচে পাকিস্তানের ইমজামাম উল হককে দুর্দান্ত ভাবে রান আউট করেন যা ক্রিকেট
বিশ্বকাপের সেরা দর্শনীয় মুহুর্ত গুলোর মধ্যে অন্যতম।ঐ বছরের নভেম্বরে ভারতের
বিপক্ষে টেস্টে  অভিষেক হয় তার।প্রথম
ইনিংসে ৪১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে  অপরাজিত ২৬
রান করেন তিনি।
                        ব্যাটিং বা বোলিং এর চেয়ে ফিল্ডিং দিয়েই  ক্রিকেট ভক্তদের মন জয় করেছেন তিনি।আন্তর্জাতিক
ক্যারিয়ারে কোনো উইকেট লাভ করেননি তিনি।টেস্ট ,ওডিআই উভয় ফরম্যাটেই প্রায় ৩৫ গড়ে
রান করেছেন তিনি।টেস্টে ৩ টি  ও একদিনের
ক্রিকেটে ২টি শতক তাঁর দখলে।টেস্টে মোট ৩৪টি এবং একদিনের ম্যাচে ১০৫টি ক্যাচ
নিয়েছেন তিনি।১৯৯৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজদের বিপক্ষে এক ম্যাচেই ৫টি ক্যাচ নিয়ে
রেকর্ড গড়েন তিনি যা এখন পর্যন্ত একদিনের ম্যাচে কোনো ননউইকেটকিপার খেলোয়াড়ের
সর্বোচ্চ।
| 
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| 
 | 
                       দূর্দান্ত ফিল্ডিং এর পুরষ্কার
হিসেবে ১৯৯৯ সালে উইজডেন বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন রোডস।২০০১ সালে টেস্ট
ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি।শ্রীলংকার বিপক্ষে শেষ টেস্টে ২১ ও ৫৪ রান করেন
তিনি।২০০৩ বিশ্বকাপ  শেষ করে একদিনের
ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চেয়েছিলেন তিনি ।কিন্তু 
কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ফিল্ডিং এর সময় হাত ভেঙ্গে সব ম্যাচ না খেলেই অবসর
নিতে হয় তাঁকে।
                        অবসরের
পর দক্ষিন আফ্রিকার  একটি ব্যাংকে
হিসাবরক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি।পরবর্তীতে দক্ষিন আফ্রিকা জাতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ
এর দায়িত্ব পান।কেনিয়া জাতীয় দলের কোচ হিসেবেও কিছুদিন কাজ  করেন তিনি।বর্তমানে আইপিএলে মুম্বাই
ইন্ডিয়ান্সের ফিল্ডিং কোচ হিসেবে কাজ করছেন তিনি।ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৯৪ সালে
ক্যাট  ম্যাককার্থিকে বিয়ে করেন ।২০১৩ সালে
তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং ম্যালেনিয়াকে বিয়ে করেন তিনি।২০১৫ সালে আইপিএল
চলাকালিন সময়ে এই দম্পতির একটি কন্যা সন্তান হয়।ভারতে জন্ম হওয়ায় তার নাম রাখা হয়
ইন্ডিয়া।
       
                বর্তমানে  তিনি  স্থায়ী ভাবে কোনো জাতীয় দলের কোচিং করাতে আগ্রহী
নন।তবে বিসিবি চেষ্টা করছে দিন ভিত্তিক চুক্তিতে তাঁকে আনার। ২০১৭ সালের শুরুতে
নিউজিল্যান্ড সিরিজে বাজে ফিল্ডিং এর পর নাজমুল হাসান পাপন রোডসের সাথে যোগাযোগের
ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমে জানান।এতে শুধু জাতীয় দলই নয়,বয়সভিত্তিক দল গুলোকেও যাতে
তিনি প্রশিক্ষন দেন সেই চেষ্টা করছে বিসিবি।যদিও এই ব্যাপারে তাঁর সাড়া কি তা জানা
যায়নি।তবে হয়তো সামনের বিপিএলে  কোনো দলের
কোচিং স্টাফে তাঁকে দেখা যেতেও পারে।


 
 
Comments
Post a Comment