দেশে দেশে ফুটবল দর্শন - পর্বঃ ১

দেশে দেশে ফুটবল দর্শন  -  পর্বঃ ১


ফুটবলের  মৌলিক  বিষয়গুলো  পৃথিবীর  সবজায়গাতে  মোটামুটি  একইরকম। তবে  দেশ    জাতিভেদে  ফুটবল  দর্শনে  রয়েছে  ভিন্নতা ব্রিটিশ  ফটবলের  প্রতিযোগীতামূলক  মনোভাব  যদি  আপনাকে  মুগ্ধ  করে  তবে  স্পেনের  ফুটবল  আপনার  সামনে  হাজির  হবে  তার  যাদু নিয়ে । আবার  জার্মান  ফুটবল  আপনাকে  দেখাবে  টিম  স্পিরিট  এবং  যান্ত্রিক  ফুটবলের  সৌন্দর্য নানা  জাতির  নানা  ফুটবল  দর্শন  নিয়ে  আলোচনা করার  চেষ্টা  থাকবে  এই  ধারাবাহিকে প্রথম পর্বে  আমাদের আলোচনার  বিষয়  ব্রিটিশ  ফুটবল।





ব্রিটিশ  ফুটবল  দর্শনকে  ধরা  হয়  পৃথিবীর  সবচাইতে  প্রাচীনতম  ফুটবল  দর্শন। এই  পদ্ধতির  প্রধান  বৈশিষ্ট্য  হল  লং  পাসের  মাধ্যমে  খেলা । সাধারণত  ডিফেন্স  থেকেই   মিডফিল্ডের  মাথার  উপর  দিয়ে  ফরোয়ার্ডদের  উদ্দেশ্যে  বল  পাঠানো  হয় । এতে  আক্রমণগুলো  হয়  দ্রুত । শক্তিশালী  ও  দ্রুতগামী  খেলোয়াড়েরা  এই  পদ্ধতির  জন্য  সবথেকে  উপযুক্ত । এই  পদ্ধতিতে  মাঠের  বিভিন্ন  প্রান্ত  থেকে  প্রচুর  ক্রস  আসে । তাই  খেলোয়াড়দের  উপরের  বলগুলোতে  দক্ষতা  থাকা  খুবই  জুরুরি।



ব্রিটিশ  ফুটবল  দর্শনের  সবথেকে  বেশি   প্রয়োগ  হয়  ইংলিশ  প্রিমিয়ার  লীগে (সংক্ষেপএ  ইপিএল) । বিশ্বব্যাপী   এই  লীগ  পরিচিত  বার্কলেইস  প্রিমিয়ার  লীগ  নামে । এই  লীগের  পথচলা  শুরু  হয়  ১৯৯২  সালে । মোট  ২২  দল  নিয়ে  ১৯৯২-৯৩  মৌসুমে  শুরু  হয়  ইপিএল । প্রথমবার  শিরোপা  জেতে  ম্যানচেষ্টার  ইউনাইটেড । সেই  থেকে  আজ  অবধি  অত্যন্ত  সফলতার  সাথে  আয়োজন  করা  হচ্ছে  এই লীগ । বর্তমানে  ফুটবল  প্রেমীদের  আকর্ষণের  কেন্দ্রে  থাকে  এই  লীগ । চলুন  সংক্ষেপে  জেনে  নিই  এই  লীগের  প্রধান  কয়েকটি  দিক ......





প্রতিযোগীতাপূর্ণ   মনোভাব , দায়বদ্ধতা  , উদ্দীপনা  এবং  গতিময়  ফুটবলের  কারণে  সারাবিশ্বে  প্রসিদ্ধ  এই  লীগ । খেলার  চলাকালীন  স্টেডিয়ামগুলো  থাকে  কানায়  কানায়  ভর্তি । দর্শকরা  পুরো  ৯০  মিনিট  তার  প্রিয়  দলকে  উৎসাহ যোগায় । খেলোয়াড়  ও  দর্শকদের  এই  প্রাণচাঞ্চল্যে  এক  অন্যরকম  আমেজ   তৈরি   চারপাশে ।





এই  লীগে  খেলা  দলগুলোর  একটা  ভালো  দিক  হল  তারা  ওয়েল – অরগানাইজড । প্রতিটি  দলই নিজ  নিজ  শক্তিকে   কাজে  লাগিয়ে  তাদের  লক্ষ্যে  পৌছানোর   চেষ্টা   করে। এর  জন্য  সারাবিশ্বের  নানা  প্রান্ত  থেকে  ভালোমানের  খেলোয়াড়  বাছাই  করে  দল  সাজায়  প্রতিটি  দলের  মালিকরা। এই  লীগে  দেখা  মেলে  পৃথিবীর  বড়  বড়  সব  কোচদের । তাই  সারাবছর  জমজমাট  এক  ফুটবল  যুদ্ধে  বুঁদ  হয়ে  থাকে  ফুটবলপ্রেমীরা ।





ইপিএল  মাঠে   যেমন  দৃষ্টিনন্দন  ফুটবল  উপহার  দেয়   তেমনি  মাঠের  বাইরে  এর  ব্যাবস্থাপনাও  পরিকল্পিত  এবং  সুশৃঙ্খল । সারাবিশ্বের  ফুটবলপ্রেমীরা  যাতে  এই  লীগ   উপভোগ  করতে  পারে  তার  জন্য রয়েছে  লাইভ  ব্রডকাস্টিং  এর   সুবিধা ।  এছাড়া  মাঠের  খেলায়  স্বচ্ছতা  ও  দর্শকপ্রিয়তার  আনার  লক্ষ্যে  নিত্যনতুন   সব  প্রযুক্তি  ব্যাবহার  করা  হয়  এই  লীগে । এই  লীগের  ম্যাচ  পরবর্তী  এবং  ম্যাচ  পূর্ববর্তী  এনালাইসিসগুলোর   মান  সমসাময়িক  অন্যান্য  লীগের  চাইতে  অনেক  এগিয়ে । এইসব  অনুষ্ঠানের  টিভিস্বত্ত্ব  মোটা   দামে   বিক্রি  হয়  টিভি  চ্যানেলগুলোর   কাছে ।





এই  লীগের  দলগুলো  নিজেদের  লীগে   যেমন  সমৃদ্ধ  তেমনি  ফুটবলের  বিভিন্ন  বৈশ্বিক  লীগ  গুলোতেও (উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ও ইউরোপা  লীগ )  তাদের   আধিপত্য  চোখে  পড়ার  মত । তাই  শুধু   নিজ  দেশ  ছাপিয়ে  সারাবিশ্বেই  জনপ্রিয়তার  চূড়ায়  রয়েছে  ইংলিশ  প্রিমিয়ার  লীগ ।



Comments

Popular posts from this blog

মজার খেলা ডার্ট বোর্ড

হাই – লাইন ডিফেন্স ইন ফুটবল

সংখ্যা দিয়ে বন্ধুত্ব!!!