নিবিড়ের গল্প পর্ব - ১

                     



১.


রাত আটটা  বেজে একুশ মিনিট । নিবিড় তার রুমে বসে চিন্তা করছে কি কি করা যায় আগামীকাল ।
নিবিড়দের বিল্ডিং এর পাশে বিশাল বিল। খোলা জায়গা । সেখান থেকে ঝি ঝি পোকার ডাক 
নিবিড়ের কানে আসছে। এই কয়েকদিন ধরেই নিবিড়ের কানে কি যেন একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে । 
কানে ঝিন ঝিন শব্দ করে । এ কারনে সে এই মুহুর্তে বুঝতে পারছেনা যে ঝিন ঝিন আওয়াজটা কি 
তার কানে হচ্ছে নাকি বাইরে থেকে আসছে । সে এখন বিভ্রান্তির মধ্যে  আছে । নিবিড় আবার 
বিভ্রান্ত হলে বিড়বিড় করে নিজে নিজে কথা বলে। অবিশ্যি এখন সে চুপচাপ ই আছে কারন সেই 
বিভ্রান্তি বেশিক্ষন স্থায়ী হলনা । নিবিড় বুঝতে পারল এটা তার কানের সমস্যাটাই ।

নিবিড় ক্লাস টেনে পড়ে, খুব সহজ সরল , কিন্তু তার চিন্তা ভাবনাগুলো জটিল টাইপের । সে খুব 
সহজ জিনিস কে জটিল করে ফেলে আবার মাঝে মাঝে অনেক জটিল জিনিস তার কাছে সহজ 
মনে হয় । নিবিড় মাইওপিয়ায় আক্রান্ত, দূরের জিনিস দেখতে পায় কম। নিবিড়  যখন ক্লাস ফাইভে 
পড়ে তখন তার এই সমস্যা ধরা পড়ে । ডাক্তার যখন নিবিড়ের বাবাকে বলে যে তার ছেলেকে চশমা 
পরতে হবে তখন নিবিড়ের মনে আনন্দের হাওয়া বইতে থাকে । তখন তার কাছে মনে হয় চশমা 
পরা খুব সৌখিন ব্যাপার । কিন্তু যখন তার বাবা ডাক্তারের কাছে এর বিকল্প জিজ্ঞেস করে , তখন 
নিবিড়ের তার বাবার উপর অনেক রাগ হয় ।

নিবিড়ের বাবা চাকরীর কারনে রাজশাহী থাকে নিবিড় আর তার মা থাকে ঢাকায়
কলিং বেলের আওয়াজে নিবিড়ের ঝিঝি পোকা নিয়ে চিন্তা দূর হল দরজা খুলে নিবিড় যাকে দেখল 
তাকে সে চেনেনা ২২-২৩ বছর বয়সী একজন এসেছে চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা

-আপনি কাকে চাচ্ছেন?       

-এটা কি নিবিড়দের বাসা?

-জি, আমিই নিবিড়।

-ওহ আচ্ছা। আমি তপু , তোমার আম্মু আছে বাসায় ।

- আপনি কি মিম এর চাচাত ভাই?

- হ্যাঁ।

-আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া ,  ভেতরে আসুন।

ওয়া আলাইকুমুসসালাম।


নিবিড় তার মাকে ডাকতে গেল। মিম হল নিবিড়ের বান্ধবী, মীম আর নিবিড়ের মা ছোটকালে এক 
স্কুলে পড়েছিল। নিবিড়ের বাসায় ফিসিক্স  পড়ানর জন্য টিউটর লাগবে তাই মীমের মা তপুকে ঠিক 
করেছে ।

নিবিড় তার রুমে গিয়ে বসল। তার মা তপুর সাথে কিছুক্ষন কথা বলল। তার পর নিবিড়ের রুমে তপু 
আসল।সে রুমে ঢুকতেই নিবিড় একটা পরিচিত গন্ধ পেল,নিবিড় বুঝতে পারল এটা সিগেরেটের গন্ধ। নিবিড়ের বাবাও সিগেরেট খায় । 

       -আজকে পড়াবনা ।বইটা দাও ।কিছু পরার জন্য দাগিয়ে দেই।

তপু কিছু জিনিস দাগিয়ে দিয়ে নিবিড়কে পড়তে বলল।

-আচ্ছা ঠিক আছে পরশু দেখা হবে তাহলে,

-        - ভাইয়া, একটা রিকোয়েস্ট করব।

-         -কি?

-         -বেনসন খেয়ে আমাকে পড়াতে আসবেন না , সিগেরেটের গন্ধ আমার সহ্য হয় না ।

বোকার মত নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে থাকল তপু।  



*পরের পর্ব- নিবিড়ের গল্প (পর্ব- ২)

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

মজার খেলা ডার্ট বোর্ড

হাই – লাইন ডিফেন্স ইন ফুটবল

সংখ্যা দিয়ে বন্ধুত্ব!!!